Tuesday, September 6, 2011

চুক্তি না হলেও তো চলে -আ ব দু ল ম তি ন খা ন, Oped 7 Sept.2011 Daily Amardesh

 "ব্রিটিশ ..দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ..বুঝে গিয়েছিল ..উপনিবেশ থেকে মানসম্মান নিয়ে তাদের কেটে পড়তে হলে উপনিবেশের মানুষের সশস্ত্র লড়াই শুরুর আগেই তাদের স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে স্বাধীন করে দেয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ..চার্চিল .. বললেন, স্বাধীনতা দিয়েও সাবেক উপনিবেশকে প্রকৃত উপনিবেশের মতো রাখা যায় যদি সেখানে তাদের পা রাখার মতো একটি জায়গা রেখে আসা যায়। চার্চিলের এ চিন্তার ফসল হলো আজকের পরস্পর শত্রু ভাবাপন্ন ত্রিখণ্ডিত ভারতীয় উপমহাদেশ। ..বিভেদ সৃষ্টিতে সফল হওয়াতেই পাশ্চাত্যের ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ পেয়ে গেছে উপমহাদেশে তাদের পা রাখার স্থায়ী জায়গা। উপমহাদেশকে চেতনাগতভাবে বিভক্ত করতে না পারলে আজ বিশ্ব রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন আকার নিত। পাশ্চাত্যের মুখ থুবড়ে পড়ার দিন আসত বহু এগিয়ে। ভারতবর্ষ ভাগ করে এবং এক দেশকে অন্য দেশের শত্রু করে তারা তাদের পতনের সেই ক্ষণটি পিছিয়ে দিতে পেরেছে। চাতুর্যে চার্চিল ক্লাইভের চেয়ে একটুও পিছিয়ে নন।.....ব্রিটেনের দখলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারতবর্ষে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা বলে কিছু ছিল না। ১৮৫৭ সালে সংঘটিত ভারতব্যাপী সিপাহি বিদ্রোহের আগ পর্যন্তও ভারতীয়রা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা কী তা জানত না। ভারতবর্ষে বহু ধর্মের ও বহু সম্প্রদায়ের বাস। ভারতীয়দের প্রকৃতিই এমন যে, তারা সব মত ও পথের প্রতি সমান সহানুভূতিশীল ও শ্রদ্ধাপরায়ণ। ফলে যে যার মতো স্বাধীনভাবে তার নিজস্ব ভাবনার পথে চলতে পারত।.."


http://www.amardeshonline.com/pages/details/2011/09/07/103692

সম্পাদকীয়  ঢাকা, বধুবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১১, ২৩ ভাদ্র ১৪১৮, ০৮ শাওয়াল ১৪৩২ হিজরী  

চুক্তি না হলেও তো চলে

আ ব দু ল ম তি ন খা ন
দীর্ঘ প্রস্তুতি শেষে অবশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং গতকাল ঢাকা এসেছেন। উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অমীমাংসিত কতগুলো বিষয় নিয়ে চুক্তি করা। এ বিষয়গুলো ভারত বিভাগ থেকে সৃষ্ট। ব্রিটিশ ভারতবর্ষকে সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে ভাগ করতে সফল না হলে এসব সমস্যার সৃষ্টি হতো না। কট্টর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ নেতা স্যার উইনস্টোন চার্চিল চাইতেন না দুনিয়াব্যাপী ব্রিটিশ সাম্রাজ্য লোপ পাক। ব্রিটিশ জাতি বাস্তববাদী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে তারা বুঝে গিয়েছিল যুদ্ধের পর যে সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যায় না, সেটি আর থাকছে না। সব উপনিবেশ থেকে মানসম্মান নিয়ে তাদের কেটে পড়তে হলে উপনিবেশের মানুষের সশস্ত্র লড়াই শুরুর আগেই তাদের স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে স্বাধীন করে দেয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাতে ব্রিটেনের মর্যাদা বাড়বে। উপনিবেশের মানুষ তাদের এ বদান্যতার কথা মনে রেখে তাদের প্রতি থাকবে কৃতজ্ঞ ও অনুগত। রাজ্য হারিয়েও তারা প্রভাব হারাবে না।

চার্চিল যে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদদের এ চিন্তাধারার সঙ্গে দ্বিমত ছিলেন তা নয়। তিনি তাদের বললেন, স্বাধীনতা দিয়েও সাবেক উপনিবেশকে প্রকৃত উপনিবেশের মতো রাখা যায় যদি সেখানে তাদের পা রাখার মতো একটি জায়গা রেখে আসা যায়। চার্চিলের এ চিন্তার ফসল হলো আজকের পরস্পর শত্রু ভাবাপন্ন ত্রিখণ্ডিত ভারতীয় উপমহাদেশ। উপমহাদেশ আজ তিন খণ্ড কেবল ভূমিগতভাবে নয়, চেতনাগতভাবেও। চেতনার বিভেদটাই আসল বিভেদ। চেতনার বিভেদ সৃষ্টিতে সফল হওয়াতেই পাশ্চাত্যের ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ পেয়ে গেছে উপমহাদেশে তাদের পা রাখার স্থায়ী জায়গা। উপমহাদেশকে চেতনাগতভাবে বিভক্ত করতে না পারলে আজ বিশ্ব রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন আকার নিত। পাশ্চাত্যের মুখ থুবড়ে পড়ার দিন আসত বহু এগিয়ে। ভারতবর্ষ ভাগ করে এবং এক দেশকে অন্য দেশের শত্রু করে তারা তাদের পতনের সেই ক্ষণটি পিছিয়ে দিতে পেরেছে। চাতুর্যে চার্চিল ক্লাইভের চেয়ে একটুও পিছিয়ে নন।

ভারতবর্ষ ভাগের ফল চোখ যার আছে তার নজর এড়িয়ে যাওয়ার নয়। ভারতবর্ষের ইতিহাস দীর্ঘ। দীর্ঘ ইতিহাসের গোড়া থেকেই দেখা যায় ভারতীয়রা প্রথমাবধি সভ্যতার শেষ ধাপ নগর সভ্যতায় কম করে হলেও পাঁচ হাজার বছর কিংবা তারও আগে পৌঁছে গিয়েছিল। আগের বঙ্গদেশে পাণ্ডু রাজার ঢিবি এবং উত্তর-পশ্চিমের মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পায় উত্খননে যে নগরগুলো বেরিয়ে এসেছে সেগুলো সাধারণ মানের হিজিবিজি নগর নয়, রীতিমত সুপরিকল্পিত মাস্টার প্ল্যানের অধীন গোছালো শহর। আজকের ঢাকা মহানগরেরও একটা মাস্টার প্ল্যান আছে। কিন্তু এ প্ল্যান মান্য করে নগর গড়ে না ওঠায় ঢাকা হয়ে গেছে ইট কংক্রিটের অরণ্য, যার অপ্রশস্ত আঁকাবাঁকা রাস্তাঘাট ধারণ ক্ষমতার বহুগুণ অধিক যানের ভিড়ে হয়ে পড়েছে যাতায়াত অনুপযোগী। কাণ্ডজ্ঞান বর্জিত নাগরিকদের নর্দমা ও ড্রেনে ময়লা ফেলায় বৃষ্টি হলেই শহর সাত হাত ময়লা দুর্গন্ধ পানির নিচে থাকে দিনের পর দিন। ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্যে নদী-খাল বিষাক্ত বর্জ্যে ভরাট হয়ে আশপাশের সব জমি হয়ে গেছে ফসল উত্পাদনের অনুপযোগী। নদী-খাল-বিলের পানিতে কারখানার কেমিক্যাল ও চাষের জমিতে ছিটানো কীটনাশক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে এসে পড়ায় মাছ ও জলজ প্রাণীর দফারফা হয়ে গেছে। এ হলো ভারতবর্ষের ছয়-সাত হাজার বছর পরের মানুষের কাণ্ড যারা জ্ঞানবিজ্ঞানে মহাশূন্য যুগে বসবাস করছে বলে দাবি করে। পাণ্ডুরাজার ঢিবির মানুষ আজকের বাংলাদেশের মানুষের চলাফেরা ও আচরণ দেখলে ভিরমি খেত।

কেবল বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের সব প্রান্তের মানুষের কাণ্ড-কারখানা ও আচরণ এ রকম হয়ে পড়ার নিশ্চয়ই কারণ আছে। উপমহাদেশে কেবল যে প্রথম পরিকল্পিত নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল তা নয়। মানবাধিকার বলে হালে যে কথাটি বহুল উচ্চারিত এবং প্রচার করা হয় (ইংরেজের ইতিহাস পড়ে) তার সূচনা ঘটে ব্রিটেনে ব্যারণদের সঙ্গে রাজার ম্যাগনাকার্টা নামে একটি চুক্তি বা সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এবং যার প্রচলন হয় যুদ্ধ করে স্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণার পর ও ফরাসি বিপ্লবের এনসাইক্লোপেডিস্টদের রচনার ফলস্বরূপ ফরাসি বিপ্লবের পর। আসলে সত্য হলো মানবাধিকারের শুধু নয়, সব জীবের পৃথিবীতে সসম্মানে সম-অধিকারে বেঁচে থাকার ভাবনা মহাবীর (জৈন তীর্থকর) নামক একজন ভারতীয় চিন্তাবিদের দ্বারাই প্রথম প্রচারিত হয় খ্রিস্টপূর্বকালে। আজ মানুষ অন্তরীক্ষ যুগে প্রবেশ করেছে। মানুষ চাঁদে পা রেখেছে এবং মনুষ্য নির্মিত যান দূরের কাছের সব গ্রহ প্রদক্ষিণ করে তাদের অবস্থা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। এসব যানের একটি এখন সৌরমণ্ডলের গণ্ডি পেরিয়ে মহাকাশের ভিন্ন নক্ষত্রলোকের দিকে ধাবমান। এর সবই সম্ভব হয়েছে প্রাচীন ভারতীয়দের গণিতশাস্ত্রের শূন্য আবিষ্কার দ্বারা। সহজ গণনার পদ্ধতি শূন্য আবিষ্কৃত না হলে মানুষের পক্ষে ভৌত প্রযুক্তির এই বিকাশ সম্ভব হতো না।

ভারতীয়রা যে সময় এতটা এগিয়ে আজকের ব্রিটেন ও ইউরোপীয়রা তখন কাঁচা মাছ-মাংস খেত এবং গুহা ও পশুর চামড়ার তৈরি তাঁবুতে থাকত চামড়ার তৈরি জামা-জুতা পরে। সেই বর্বরতা ছাড়িয়ে আজ ইউরোপীয় ও তাদের বংশধর আমেরিকানরা কোথায় আর সাত হাজার বছর থেকে সুসভ্য ভারতীয়রা কোথায়? এ পার্থক্য সৃষ্টি হওয়ার দরুনই ব্রিটেনের পক্ষে সম্ভব হয় তাদের সব উপনিবেশসহ তাদের সাম্রাজ্যের মুকুট ইন্ডিয়াকে ‘স্বাধীন’ করে দিয়েও তাদের অধীন রাখা।

ব্রিটেনের দখলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারতবর্ষে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা বলে কিছু ছিল না। ১৮৫৭ সালে সংঘটিত ভারতব্যাপী সিপাহি বিদ্রোহের আগ পর্যন্তও ভারতীয়রা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা কী তা জানত না। ভারতবর্ষে বহু ধর্মের ও বহু সম্প্রদায়ের বাস। ভারতীয়দের প্রকৃতিই এমন যে, তারা সব মত ও পথের প্রতি সমান সহানুভূতিশীল ও শ্রদ্ধাপরায়ণ। ফলে যে যার মতো স্বাধীনভাবে তার নিজস্ব ভাবনার পথে চলতে পারত। ব্রিটেন তার ভারত সাম্রাজ্য ধরে রাখতে গিয়ে এ অবস্থার ইতি টেনে দিল। ভারতে হিন্দু বলে কোনো ধর্ম সম্প্রদায় ছিল না। বহু কোটি দেবদেবী ও দেবতা-দানবে বিশ্বাসী ভারতীয়রা নিজ নিজ অঞ্চলের দেবদেবীর আরাধনা করত। এ কারণে বাংলাদেশের উপাস্য দেবদেবীর সঙ্গে, উদাহরণ স্বরূপ, উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের উপাস্য দেবদেবীর মিল নেই। আর্যরা বেদ উপনিষদ নিয়ে ভারতে স্থায়ী হওয়ার পর আর্য ব্রাহ্মণরা তাদের রচিত অনুশাসন দিয়ে সমাজ পরিচালনা শুরু করলে এবং তাদের রচিত দুই মহাগ্রন্থ রামায়ণ ও মহাভারতে সৃষ্ট চরিত্রাবলী সব নাগরিকের রোল মডেল হয়ে উঠলে ভারতীয় সমাজের সব সদস্য সেসব মান্য করে চলতে থাকে। অন্য ধর্মের যারাই ভারতবর্ষে এসে বসবাস করতে শুরু করে তারা, উদাহরণস্বরূপ, ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি বিশ্বস্ত থেকেও ভারতীয় সমাজের দুই মহাকাব্যে বিবৃত পিতা-মাতার প্রতি নিস্প্রশ্ন আনুগত্য, বড় ভাইবোনদের প্রতি ছোট ভাইবোনদের ভালোভাসা ও আনুগত্য, পিতার অবর্তমানে প্রথম পুত্রের পরিবারের দেখাশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেনে চলতে থাকে। ফলে ভারতবর্ষে ঈশ্বর ও দেবতায় বিশ্বাস ভিন্ন ভিন্ন থাকলেও, ভারতবর্ষের বা মোগল আমল থেকে পরিচিত হিন্দুস্থানের সব অধিবাসীর সামাজিক আচরণ অভিন্ন হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, সব ভারতীয় ও হিন্দুস্থানীয় বিশ্বদৃষ্টি অভিন্ন হওয়ার কারণ হলো ভারতের যারা ধর্মান্তরিত ভিন্ন ধর্মাবলম্বী; যেমন—মুসলমান ও খ্রিস্টান তারা ধর্ম পালনের পদ্ধতি বদলালেও ভারতীয় হিসেবে তাদের সামাজিক আচরণ তো বদলাতে পারে না। এ কারণে উদাহরণস্বরূপ, বাংলার হিন্দুর সঙ্গে বাংলার মুসলমানের যত মিল, পশ্চিম এশিয়ার মুসলমানের সঙ্গে তার ধারে কাছেও সে মিল নেই। একইভাবে বাংলার মুসলমানের সঙ্গে বাংলার হিন্দুর যত মিল, উত্তর ও পশ্চিম ভারতের হিন্দুর সঙ্গে তার ধারে কাছেও সে মিল নেই। তবে সব মিলে সারা ভারতবর্ষের মানুষের রোল মডেল অনুরূপ হওয়ায় সারা ভারতের বিশ্বাস নির্বিশেষে সব মানুষের চরিত্র মোটামুটি এক। চরিত্র যে এক তার সর্বসাম্প্রতিক প্রমাণ হলো ভারত-ইংল্যান্ড ক্রিকেট সিরিজ। এ সিরিজে ধবল ধোলাই হয়ে ভারতীয়রা শোচনীয় পরাজয় বরণ করে। ভারতের হারার কারণ হিসেবে ইংরেজ এক সাবেক খেলোয়াড় ভারতীয় দলকে তুলনা করেছেন বাংলাদেশ দলের সঙ্গে। তিনি বলতে চেয়েছেন আত্মবিশ্বাসের পারদের ওঠানামার কারণে বাংলাদেশ দল জেতা খেলায় যেমন হেরে যায়, ভারতীয় দলের অবস্থাও হয়ে গেছে তেমনি। মানুষ হিসেবে দৈহিক ও মানসিক গঠন উপমহাদেশের সব মানুষেরই যে এক, এ তারই প্রমাণ।

কিন্তু ব্রিটিশ তেলেসমাতি দেখিয়ে দিল মুসলমানদের বিপরীতে সব ভারতীয়কে হিন্দু বলে পরিচিত করিয়ে। মুসলমান শাসকের কাছ থেকে তারা ভারতবর্ষ দখল করায় ‘মুসলমান হিন্দুর প্রধান শত্রু’, ভারতের ইতিহাস এভাবে লিখে ইংরেজ হিন্দুদের ক্ষেপিয়ে তোলে। ব্রিটিশের লেখা ভারতবর্ষের ইতিহাস তিন আমলে বিভক্ত, যথা : হিন্দু আমল, মুসলমান আমল ও (শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টান নয়) ব্রিটিশ আমল। ব্রিটিশ আমলকে ইংরেজ খ্রিস্টান আমল না বলে অভিহিত করে আধুনিক আমল বলে! ইংরেজের এই আধুনিক আমলের এতই গরিমা যে হাজার বছরের মধ্যে যা ভুলেও ঘটেনি, প্রতিবেশীর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় তাই ঘটল; দেশ প্রথমে (১৯৪৭) দুই টুকরো এবং পরে (১৯৭১) তিন টুকরো হলো। ছয় কোটি মানুষ হলো নিজ ভিটেমাটি ছাড়া। লাখ লাখ নরনারী ও শিশু অতি নির্দয়ভাবে হলো খুন। হাজার হাজার নারী হারাল সম্ভ্রম। এর সবই প্রতিবেশীর দ্বারা। ভারতীয়দের এ দুর্দশা দেখে ইংরেজ মুচকি মুচকি শুধু হাসল। ইংরেজদের শরীরে আঁচড়টি লাগল না। এটা শাসক হিসেবে ইংরেজদের এক বিরাট কৃতিত্ব।

ইংরেজের স্বহস্তে তৈরি প্রাক-১৯৪৭ সব সম্প্রদায়ের ভারতীয় নেতাদের আহাম্মকি দেখলে আজ চোখ যায় কপালে উঠে আর কপাল চাপড়ানো ছাড়া উপায় থাকে না। তখন থেকে আজ প্রায় আট দশক কেটে যাচ্ছে। ইংরেজের শয়তানিটা, আরও বেশি কপাল চাপড়ানোর বিষয়, উপমহাদেশের একটি দেশের নেতাদেরও এখন পর্যন্ত ধরতে না পারা। শুধু তাই নয়, ইংরেজের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে মার্কিন ষড়যন্ত্র ও শয়তানি। উপমহাদেশের বিভক্ত তিন দেশের নেতারা একযোগে ওই শয়তানি নস্যাত্ করতে নিজেদের মধ্যেকার সব বিবাদ অচিরে মিটিয়ে ফেলবে তা নয়, তারা তার বদলে সাময়িক স্বস্তির জন্য করার চেষ্টা করছে একে অপরের সঙ্গে চুক্তি। চুক্তি বন্ধুর সঙ্গে হয় না, চুক্তি করে শত্রু দু’পক্ষ। চুক্তি করতে গেলে লাভ লোকসানের হিসাব করতে হয়। প্রবল পক্ষ সাধারণত দুর্বল পক্ষকে ঠকাতে চেষ্টা করে। ভারত-বাংলাদেশ যত চুক্তি এ যাবত্ হয়েছে দুর্বল পক্ষ বাংলাদেশ তা থেকে লাভবান হয়নি। হাসিনা-মনমোহন চুক্তি দ্বারা যে হবে না তাও অগ্রিম বলে দেয়া যায়।

উপমহাদেশের শান্তি ও অগ্রগতির জন্য যা করা দরকার তা এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের চুক্তি নয়। চুক্তি ছাড়া এটা সম্ভব প্রাক-১৯৪৭ পর্বে ভারতবর্ষ যেমন ছিল ঠিক তেমনটি করে ফেলা, তিন দেশের তিন রাজধানী ঠিক রেখে এবং সীমান্তরেখা শুধু মানচিত্রে রেখে। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও ঘাতক রক্ষী উঠিয়ে নিয়ে। তাহলে ট্রানজিট ও করিডোর সমস্যা বলে কিছু থাকবে না। থাকবে না বাণিজ্যে শুল্ক অশুল্ক বাধা। থাকবে না অবাধে যাতায়াতের বাধা। থাকবে না নদীর পানি এক তরফা প্রত্যাহার দ্বারা ভাটির দেশের মরুকরণ ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি। তখন পুরো উপমহাদেশের ভৌগোলিক ভারসাম্য ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে যেমন ফারাক্কার কূপ্রভাব দূর করতে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে ভারত ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশে গঙ্গা বা পদ্মা ব্যারাজ তৈরি করে দেবে। তাতে উপমহাদেশ হয়ে উঠবে মহাশক্তিধর একটি রাজনৈতিক সত্তা, যেটা পণ্ড করতে ব্রিটিশের যত তত্পরতা।

উপমহাদেশের এ রকম হওয়াটাই এখন সময়ের দাবি। চুক্তি সই করে স্থায়ী কিছু হবে না। যা দরকার তা চুক্তি নয়, ব্রিটিশ সৃষ্ট নষ্টামির অবসান। সে পথে নেতারা হাঁটবেন? উপমহাদেশের সাধারণ মানুষ চায় তাদের সে পথেই হাঁটা এবং কালবিলম্ব না করে।

Tuesday, August 30, 2011

30-08-2011 ওরা ফিরে আসেনি : ইন্টারন্যাশনাল ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স ডে আজ

The Daily Amardesh, 30 Aug.2011. Page-1

ওরা আর ফিরে আসেনি। এখনও পথ চেয়ে আছেন স্বজনরা, কিন্তু তাদের খোঁজ নেই। স্থান ও সময় পৃথক হলেও প্রত্যেকের ঘটনার বিবরণ একই। সাদা পোশাকধারীদের হাতে আটক, এরপর নিখোঁজ-গুম। ধরে নেয়ার সময় নিজেদের কখনও র্যাব, কখনও গোয়েন্দা পুলিশ আবার কখনও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সিভিল টিমের সদস্য পরিচয় দিলেও আটকের পর আর তাদের খোঁজ মেলে না। কোনো সংস্থা এর দায়দায়িত্ব স্বীকার করে না। কী অপরাধে আটক করা হলো এবং কেনই বা তাদের গুম করা হলো এর কোনো জবাব পাওয়া যায় না। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর কাছ থেকে জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন, আদালতে রিট, র্যাব গোয়েন্দা কার্যালয়ে খোঁজ এবং থানা পুলিশের কাছে ধরনা দিতে দিতে তারা এখন ক্লান্ত, হতাশাগ্রস্ত এবং মর্মাহত। প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।


অব্যাহতভাবে চলতে থাকা গুম-হত্যার মধ্য দিয়ে আজ ৩০ আগস্ট পালিত হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স ডে। এই দিবস সম্পর্কে অনুপ্রাণিত হয়েছিল লাতিন আমেরিকার ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন ফর রিলেটিভস অব ডেটেইনেড ডিসঅ্যাপিয়ারড সংগঠন, যা একটি বেসরকারি সংস্থা। এই সংগঠনটি গোপন গ্রেফতার ও গুমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১৯৮১ সালে কোস্টারিকায় স্থাপিত হয়েছিল। তখন লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশে প্রতিনিয়তই গোপনে গ্রেফতার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে গুম করা হতো।


মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান জানান, দেশে গুম হয়ে যাওয়ার ঘটনা বেড়েই চলছে। বিগত ২০১০ ও ১১ সালে সাদা পোশাকধারীদের হাতে আটক হওয়ার ঘটনায় অপরাধের এক নতুন মাত্রা যোগ হয়। গত বছর আটক হওয়ার পর নিখোঁজ ১৭ ব্যক্তির স্বজনরা প্রিয়জনকে খুঁজে পায়নি। তিনি বলেন, শাসকগোষ্ঠী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার ও তথ্য দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।


অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়মুক্তির জন্য নানা তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে রক্ষীবাহিনী ও স্পেশাল বাহিনী বামপন্থী লোকজনকে আটক করে নিত। তাদের কাউকে পাওয়া যেত আবার কাউকে পাওয়া যেত না। ঠিক একইভাবে বর্তমানে দেশে গুমের ঘটনা ঘটছে। এতে দেশে আইনশৃঙ্খলা আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অধিকার চাচ্ছে গুমের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক কনভেনশনে বাংলাদেশ সরকার স্বাক্ষর করুক। তা না হলে দেশের অবস্থা ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাবে।


আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিরাপত্তা বাহিনীর গুম-হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে। গুম-নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সম্প্রতি এশিয়ান ফেডারেশন এগেইনস্ট এনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সের চেয়ারপার্সন মুগিয়ান্তো ও মহাসচিব ম্যারি এলিন ডি. বাকালসো জেনেভায় জাতিসংঘ দফতরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তারা বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় গুম-হত্যার ঘটনা ঘটছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গুমের শিকার জনগণ এ নিয়ে কোথাও আশ্রয় পাচ্ছে না। ভিকটিমের পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে থানা তা গ্রহণ এবং রেজিস্ট্রারভুক্ত করছে না। এটা নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হলে মানবাধিকার রক্ষা করা আবশ্যক উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, আমাদের সদস্য মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ গুম-হত্যা নিয়ে অনুসন্ধানের পর তথ্য প্রকাশ করছে। এতে অধিকারকেও নিগৃহীত হতে হচ্ছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এশিয়ান ফেডারেশন এগেইনস্ট এনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সের কর্মকর্তারা বলেন, হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সদস্যপদ টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক বিধি অনুযায়ী নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তারা। একই সঙ্গে তারা বাংলাদেশে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা সংস্কারেরও দাবি জানান।


থামছে না গুম : জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবাদ সত্ত্বেও কিছুতেই থামছে না আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে নির্যাতন ও তাদের নামে অপহরণ ঘটনা। দিনের পর দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও খোঁজ মিলছে না নিখোঁজ ব্যক্তিদের। ক্রসফায়ারের পর বর্তমানে বেশি আলোচিত হচ্ছে গুমের ঘটনা। কেউ কেউ বলছেন, র্যাবের পরিচয়ে বা সাদা পোশাকধারী লোকজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের অপহরণ করছে। মাঝে-মধ্যে র্যাব বা পুলিশ হেফাজতে দীর্ঘদিন আটক থাকার পর এদের কেউ কেউ ফিরে আসছে। ছেড়ে দেয়ার সময় হুমকি দেয়া হচ্ছে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে ক্রসফায়ার দেয়া হবে। ওইসব ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত, ব্যবসায়িক লেনদেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং র্যাব-পুলিশ সোর্সদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে না পারলেও আটক করে নিখোঁজ করে দেয়ার ঘটনা ঘটছে।


চৌধুরী আলম : বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলম (৬৬) ১৪ মাস ধরে নিখোঁজ। তার ছেলে আবু সাইদ চৌধুরী বলেন, তিনি বেঁচে আছেন, না-কি মারা গেছেন জানি না। মারা গেলেও তার লাশ কোথায়? কারা তাকে আটক করল, কোথায় নিয়ে গেল সব কিছুই অজানা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বাবাকে ধরে নেয়া হলো। অথচ কোনো সংস্থা তা স্বীকার করছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরনা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। অসুস্থ মা হাসিনা চৌধুরীসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আবু সাইদ চৌধুরী আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, সরকারের কাছে আমরা এখন এতটুকু সান্ত্বনা চাই যে, কোথায় আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। অথবা তার লাশ কোথায় ফেলে দিয়েছে। জানতে পারলে ওই স্থানটিতে আমরা অন্তত প্রতি বছর গিয়ে একটু সান্ত্বনা পেতাম। গত বছরের ২৫ জুন রাজধানীর ইন্দিরা রোডের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে প্রাইভেটকারে ধানমন্ডি যাওয়ার সময় সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিদের হাতে আটক হন তিনি। গাড়ি থামিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে যায় বলে পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। পরিবার সূত্র জানায়, চৌধুরী আলমকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আটক করার পর আদালতে রিট করায় তাকে খুঁজে বের করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সচিব ও পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে মামলাটি সিআইডি পুলিশ তদন্ত করলেও পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলেননি তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর শাহনুর বারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উল্টো তিনি কোনো তথ্য আছে কি-না জানতে চান বাদীর কাছে। এরই মধ্যে চৌধুরী আলমের ভাই খোরশেদ আলম মিন্টুকে দুই দফায় গ্রেফতার করে পুলিশ। একবার আটকের পর ছাড়া পেয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে গেলে সেখানে আবার মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তামানে তিনি সিলেট কারাগারে আছেন।


ব্যবসায়ী রানার পরিবারে শোকের মাতম : সদরঘাট এলাকার ব্যবসায়ী তারিক উদ্দিন আহম্মেদ রানার (৩৪) খোঁজ মেলেনি ৫ মাসেও। অপহৃতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে আটক করে নিয়েছে। এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছে রানার পরিবার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রানার বৃদ্ধা মা আশরাফুননেসা ছেলে শোকে এখন মৃত্যু শয্যায়। বাবা আজহার উদ্দিন ১০ দিন ধরে ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। অসুস্থ বাবা আজহার উদ্দিন বলেন, আমার নিরপরাধ ছেলেকে কেন এমন করে নিখোঁজ করা হলো কিছুই জানি না। ওকে ফিরে না পেলে ওর মাকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। ছেলে শোকে বাড়িতে এবার ঈদ হবে না। ঈদের আনন্দ ধূলোয় মিলে গেছে। রানার বড়ভাই জানান, তার ছোট ভাইয়ের নামে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। তিনি সদরঘাট ইস্ট বেঙ্গল মার্কেটের কালার প্লাস গার্মেন্টের মালিক। গত ৮ এপ্রিল সূত্রাপুরের লালকুঠি ফরাশগঞ্জ ক্লাব কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত বড়ভাই ইয়াদ আহম্মেদ দিপুর বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে সে উপস্থিত ছিল। বিকাল ৪টার দিকে কমিউনিটি সেন্টারের সামনে রানা এসে দাঁড়ালে ৬/৭ জন সাদা পোশাকের অস্ত্রধারী তাকে টেনে একটি মাইক্রোবাসে তোলে। ওই সময় স্থানীয় লোকজন অজ্ঞাত অস্ত্রধারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের র্যাবের লোক বলে দাবি করে। পরবর্তীকালে র্যাব-১০-এর কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।


মুদি দোকানি রফিকুল : ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ৬২০, উত্তর শাহজাহানপুর থেকে সাদা পোশাকের ও পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা মুদি দোকান কর্মচারী রফিকুল ইসলামকে (৪১) ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। নিখোঁজ রফিকুলের পরিবারের সদস্যরা মানবাধিকার সংস্থা অধিকারকে জানিয়েছে, রফিকুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তারা র্যাব-৩, স্থানীয় থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েছেন, কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন বিকালে র্যাবের পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকের ১৫/২০ জন লোক দোকান থেকে রফিকুলকে আটক করে নিয়ে যায়। কী অপরাধে তাকে আটক করা হয়েছে এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানায়নি। দিনদুপুরে রফিকুলকে আটক করে নেয়ার এ দৃশ্য আশপাশের অন্যান্য দোকানদার, পথচারী ও সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে।



বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তৌফিক : ২২ ফেব্রুয়ারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌফিক আহমেদ হাসান হিযবুত তাহ্রীরের পোস্টারসহ অন্য দু’জনের সঙ্গে ধরা পড়ে। এ ব্যাপারে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় ১৩ মে সে জামিন পায়। হাসানের বাবা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ খবির উদ্দিন অভিযোগ করেন, পুলিশ ও কারারক্ষীদের সূত্রে তিনি জানতে পারেন, তার ছেলেকে জেল গেট থেকে জামিনে বের হয়ে আসার পর পরই সাদা পোশাকে র্যাব অপহরণ করেছে। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ ও র্যাব ১০-এর ডিএডির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন খবির উদ্দিন। খবির উদ্দিন বলেন, আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৯ জুন ৬ জন সাক্ষী দিলেও ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মাহুমদ এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন মুখ্য মহানগর হাকিমের কাছে দাখিল করেননি। তিনি ২/১ দিন পরই আদালতে খোঁজ নিলে আজ দিব কাল দিব বলে সময়ক্ষেপণ করছেন। বিষয়াটি নিয়ে আইনজীবী সমিতির সদস্যরা উদ্বিগ্ন।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী : গত বছরের ৮ নভেম্বর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানা বিএনপির সভাপতি ও করলডেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে র্যাব সদস্যরা গাজীপুর থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। গাজীপুর-জয়দেবপুর বাইপাস রোডের চৌরাস্তা এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী ৪/৫ জন লোক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তার গাড়ি থেকে জোর করে তাকে অন্য একটি গাড়িতে তুলে নেয়। কিন্তু তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে অস্বীকার করছে র্যাব।


গত বছরের ১৪ জুলাই গোলাম মুর্তজা (৩০) নামের একজন ছাত্র সংগঠককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী ৬/৭ ব্যক্তি ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে হাতকড়া লাগিয়ে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। গোলাম মুর্তজার আত্মীয়স্বজনরা সিআইডি, র্যাব এবং ধানমন্ডি থানায় যোগাযোগ করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি।


সম্প্রতি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তিন যুবককে আটক করে নেয়ার পর দু’জনের লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরে এবং একজনের লাশ পাওয়া যায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে


গত বছর বছরের ২৭ এপ্রিল মিজানুর রহমান সুমন নামের একজন ব্যবসায়ীকে সাদা পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা গাইবন্ধার মহিমাগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। 


লিয়াকত : ২০০৮ সালের ২৪ নভেম্বর রাজধানীর লালমাটিয়ায় বোনের বাসা থেকে সাদা পোশাকের একদল লোক আওয়ামী যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা লিয়াকত হোসেনকে তুলে নিয়ে যায়। লিয়াকতের বোন জানান, তারা এখনও ভাইয়ের সন্ধান পাননি। তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে আবেদন করে এবং র্যাব ও পুলিশের কাছে ধরনা দিয়েও কিছু জানতে পারেননি। লিয়াকতের স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করে বলেছিলেন, তার স্বামীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করেছে। কিন্তু র্যাব, পুলিশ বা সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষই লিয়াকতকে আটক করার কথা স্বীকার করেনি। এ ব্যাপারে লিয়াকতের পরিবারের সদস্যরা আদালতে গিয়েও সরকারের কাছ থেকে কোনো উত্তর পায়নি। এখানে উল্লেখযোগ্য, লিয়াকত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকাভুক্ত ২৩ শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীর একজন।


এছাড়াও রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন, নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও তার ভাগ্নে সুজন, কাফরুলের সাখাওয়াত হোসেন দুলাল, হাতিরপুলের নির্মাণসামগ্রী ব্যবসায়ী জহির রায়হান হিরন আটক হওয়ার পর নিখোঁজ রয়েছে।

অন্যদিকে ১৭ এপ্রিল বাড্ডা কুড়িল এলাকা থেকে র্যাব পরিচয়ে অজ্ঞাত কিছু লোক ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার মিজানুর রহমান মিজান, নাজমুল হক মুরাদ ও ফোরকানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানের পেছনে তুরাগ নদীর বালুতে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কিছুদিন পর ফোরকান রহস্যজনকভাবে ফিরে আসে। পরে সে র্যাবের হাতে আটক হওয়ার বর্ণনা দেয়। কিন্তু কিছুদিন পর সে গ্রামের বাড়ি রাজাপুরে ফিরে গেলে সেখান থেকে আবার নিখোঁজ হয় এবং এখন পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2011/08/30/102624

Saturday, July 30, 2011

Europe's Right Wing: A Nation-By-Nation Guide to Political Parties and Extremist Groups

Some claim Anders Breivik was a lone wolf, a madman, but others see in his manifesto the signs of an ideology that has spreading across Europe

Norway




On the Ballot

Party: Progress Party
Leader: Siv Jensen
Key issues: Immigration, free market, law and order
Seats in parliament: 41/169

The Progress Party, which accused attacker Anders Behring Breivik once supported, won 22.9% of the vote in the 2009 election, the best result in the party's 38-year history. The second-largest party in parliament since 2005, it has historically been shunned by other parties. But in recent years, its growing popularity has moved the opposition Conservative Party to say it would consider working with the Progress Party in a coalition government.


On the Fringe

Vigrid
Founded in 1988, the group — described by anti-fascist organization Searchlight as a "Nazi psycho sect" — uses ancient Norse and puts its members through paintball training. In 2009, the group registered as a political party and participated in the parliamentary election, but received only 0.007% of the vote.


BootsBoys
Neo-Nazi group founded in 1987. In 2002, two members of the group were convicted of the murder of 15-year-old Benjamin Hermansen, the son of a black Ghanaian father and white Norwegian mother. The stabbing of Hermansen in Oslo, regarded as Norway's first race-related murder, triggered mass protests in the capital.



Britain

By Sonia Van Gilder Cooke

On the Ballot

Party: British National Party
Leader: Nick Griffin
Key issues: Immigration, Islam, Euroskepticism
Seats in parliament: 0/1,436

After making some modest gains over the past decade, the party's support has slumped of late. It received just 1.9% of the vote in the 2010 general election, despite fielding more than 300 candidates and attempts to distance itself from allegations of racism. Still, in 2009, the party entered the European Parliament for the first time, with two seats.


On the Fringe

English Defence League
Founded in 2009, the group, which protests the perceived spread of Islamic extremism in the U.K., is estimated to have 300-500 active members.



Netherlands

On the Ballot

Party: Freedom Party Leader: Geert Wilders
Key issues: Anti-establishment, Islam, law enforcement
Seats in Parliament: 24/150

Geert Wilders single-handedly founded the Freedom Party in 2005. Despite its youth and the flamboyance of its leader — Wilders declared earlier this year that juvenile offenders should be relegated to a "village for scum" — the party has achieved overwhelming popularity. In March 2011, polls showed the party with 17.6% approval, second only to the Liberal Party, which governs in a minority coalition with the Christian Democrats.


On the Fringe

Nederlandse Volks-Unie (Dutch People's Union)

The neo-Nazi group, founded in 1971, argues for the rehabilitation of convicted World War II criminals and often appears in S.S. costume at demonstrations. The group has fielded candidates in local and national elections in recent years, but has yet to secure a seat.

Netherlands National Youth

The one-year-old group aims to establish a white Netherlands and banish immigrants.


Italy

On the Ballot
 
Party: Lega Nord (Northern League) Leader: Umberto Bossi
Key issues: Immigration, devolution
Seats in parliament: 85/945

The Northern League won 12.7% of the national vote in Italy's 2010 election. The League has long been a controversial and sometimes troublesome partner in Prime Minister Silvio Berlusconi's governing coalition. In 1994, the League abandoned the partnership after less than a year in power, collapsing Berlusconi's government and driving him from office in 1995 — it took until 2001 for him to make it back into the president's seat. The party holds governorships in Piedmont and the Veneto region, and nine seats in the European Parliament.
 
On the Fringe

Movimento Sociale-Fiamma Tricolore (Tricolor Flame)
The neo-fascist political party, founded in 1995, got 0.79% of the vote in Italy's 2009 parliamentary election.

Veneto Fronte Skinheads
One of many skinhead organizations in Italy, the group, founded in 1986, is based in the Veneto region, reportedly the center of the country's neo-Nazi activity.


Germany

On the Ballot

Party: Nationaldemokratische Partei Deutschlands (National Democratic Party of Germany)
Leader: Udo Voigt
Key issues: Capitalism, globalization, Islam
Seats in parliament: 0/622

While Germany's oldest nationalist party has no seats in the Bundestag, the German parliament, it does hold seats in two of the country's sixteen states. In 2003, the German government attempted to ban the NPD, but the country's Supreme Court blocked the initiative after it was revealed that the party members whose actions formed the bulk of the government's case were in fact agents of the German intelligence services.
 

On the Fringe
 
Autonome Nationalisten
The young neo-Nazi group, founded in 2003, emphasizes violence and its members typically wear all-black. The group gain notoriety in May 2008, when an Autonome Nationalisten mob attacked a group of far-left protestors and police, lighting cars on fire and severely injuring dozens. Germany's Interior Minister at the time said the event heralded a "new quality" of far-right violence in the


France


 
On the Ballot

  Party: Front National (National Front) Leader: Marine Le Pen
Key issues: Protectionism, immigration
Seats in parliament: 0/577
Led by the daughter of its controversial former head Jean-Marie Le Pen, the party won 11% of the vote in the local elections in March 2011. Since the younger Le Pen took the reins in January, the Front National's popularity has surged, with opinion polls suggesting Le Pen could win the first round of next year's presidential election. It also holds three seats in the European Parliament.
 

On the Fringe

Nomad 88
The violent neo-Nazi group — which, like all neo-Nazi groups in France, is banned — came to public attention in 2008 when three of its members went on a shooting spree to "purge" the suburbs of immigrants. The perpetrators, who did not claim any victims, were sentenced to prison in 2010, along with nine other Nomad 88 members, for offenses ranging from arms possession to membership in a violent gang.

Bloc Identitaire
Founded in 2003, this nationalist political group promotes French heritage and opposes inter-racial marriage. In 2006, the group was accused of distributing pork-laden "identity soups" to homeless people in Nice, Paris, and other European capitals with the express purpose of excluding Jews and Muslims.


Belgium

On the Ballot
Party: Vlaams Belang (Flemish Interest) Leader: Bruno Valkeniers
Key issues: Flemish independence, multiculturalism, traditional values
Seats in Parliament: 15/150

The party won 12% of the vote in Flanders as recently as 2007, but support has waned recently with the emergence of the more moderate New Flemish Alliance. In the June 2010 elections, Party Vlaams Belang won 7.8% of the Flemish vote.
 

On the Fringe

Bloed, Bodem, Eer en Trouw (Blood, Soil, Honour and Loyalty)

In 2006, 17 members of this neo-Nazi outfit, founded two years previously, were charged with planning terror attacks on the National Bank and plotting an army-led coup to create a fascist Flemish state. Their trial is set for December. That same year, student and BBET follower Hans van Themsche went on a racially motivated shooting spree in Antwerp, killing two.


Denmark

On the Ballot
Party: Dansk Folkeparti (Danish People's Party)
Leader: Pia Kjaersgaard
Key issues: Immigration, Euroskepticism, traditional values
Seats in Parliament: 25/179

With a leader who is often voted Denmark's most powerful woman, the party secured 13.8% of the vote in the 2007 parliamentary election, making it the third-largest party in Denmark.
 
On the Fringe

National Socialist Movement of Denmark

Founded in 1991, the group is an officially registered neo-Nazi political party with roots in the Danish Nazi party. In April 2010, its leader Jonni Hansen was found not guilty on charges of spreading racist propaganda.


Finland

On the Ballot
Party: True Finns
Leader: Timo Soini
Key issues: E.U. and euro bail-outs, immigration
Seats in Parliament: 39/200

The True Finns emerged from obscurity to capture 19% of the votes in the April 2011 election, finishing just behind the conservative National Coalition Party and the Social Democrats. When the two top parties came to form the current six-party coalition government, the True Finns were excluded.
 
On the Fringe

National Socialist Workers' Party

Founded in the run-up to the April 2011 election, the anti-immigration, neo-Nazi group — which claims a few dozen activist members — made a failed attempt to formally register as a party.

Sweden
On the Ballot

Party: Sweden Democrats
Leader: Jimmie Akesson
Key issues: Immigration, crime, Islam
Seats in Parliament: 20/349

With 5.7% of the votes in the 2010 elections, the Sweden Democrats won seats in parliament for the first time. The party was once more extreme, but in 2001 shed its Nazi trappings — including uniforms and swastikas — to gain mainstream appeal.

Party: Svenskarnas parti (Party of Swedes)
Leader: Daniel Höglund
Key issues: Immigration, crime, multiculturalism
Seats in Parliament: 0/349

In 2010, the party won 2.8% of the vote in the Grastorp municipal election, giving the party its only seat in Sweden. Höglund, who formerly led the Nationalsocialistisk front — or Aryan Brotherhood — took up the councillorship, only to be disqualified because of illegitimate residential status.
 

On the Fringe

The Swedish Resistance Movement

According to Searchlight, the group, founded in 1996, attracts Sweden's "most violent and pro-terrorist Nazis." Several men associated with the group have been jailed for violence in recent years, including Hampus Hellekant, who served time for the murder of union official Bjorn Soderberg in 1999.

Hungary

On the Ballot

Party: Jobbik
Leader: Gabor Vona
Key issues: Roma minority
Seats in Parliament: 47/386

Gained entry into parliament for the first time in April 2010, after securing 16.71% of the vote in general elections. The party also secured three seats in the last European Parliament elections.
 
On the Fringe

Magyar Garda (Hungarian Guard ) 

The banned paramilitary group was co-founded in 2007 by Jobbik leader Vona. At the Hungarian Guard's inaugural ceremony, during which members were sworn in wearing Nazi uniforms, Vona explained that the group had been set up "in order to carry out the real change of regime and to rescue Hungarians.


Austria

On the Ballot
  Party: Freedom Party
Leader: Heinz-Christian Strache
Key issues: Euroskepticism, immigration, cultural identity
Seats in parliament: 34/245

The Freedom Party joined Austria's coalition government in 2000 and has become a powerful force in the country. In the 2010 state elections, the party garnered 25.77% of the vote, coming in second to the Social Democratic Party and doubling its seats in parliament. By March 2011, the Freedom Party had an approval rating of 29%, putting it neck-and-neck with the country's two other major parties. Its photogenic young leader, Heinz-Christian Strache, notoriously called women in burqas "female ninjas" in 2008 and has promised to cut off funds for "bankrupt E.U. countries" if he is elected chancellor.
Party: Alliance for the Future of Austria
Leader: Josef Bucher
Key issues: free markets, privatization, Atlanticism
Seats in parliament: 21/245

The economically liberal Alliance focuses less on hot-button cultural issues than does the Freedom Party, and is more moderate regarding immigration and the E.U. In the 2010 elections, the party claimed only 1.3% of the vote.

On the Fringe

Volkstreue Ausserparlamentarische 

Opposition Founded in 1986, the party was banned by the Austrian government in the 1990s. Its former leader, Gottfried Kuessel, was arrested in April 2011 for allegedly running a pro-Nazi website and is awaiting trial.

Sunday, May 15, 2011

The Rohingya ethnic group of Burma is one of the most persecuted groups in the world -Refugees International

fromRefugees International ri@refugeesinternational.org










*Bangladesh: The Silent Crisis*

"Anywhere is better for us. Even the fire, the sea, or desert," a Rohingya woman told Refugees International's staff during a recent mission to Bangladesh. The Rohingya ethnic group of Burma is one of the most persecuted groups in the world. More than 200,000 have fled to Bangladesh, where many have no legal rights and face physical and sexual attacks. The international community must urge the Bangladeshi government to register undocumented refugees and improve protection for all vulnerable Rohingyas. Resettlement of refugees to third countries and increased assistance for communities hosting refugees must be a priority for those governments working with this at-risk group.

 * Read the full field report [ http://refugeesinternational.org/policy/field-report/bangladesh-silent-crisis ].
 * For more on the hardships Rohingyas face in Bangladesh because of a lack of documentation, read our press release [ http://refugeesinternational.org/press-room/press-release/rohingya-refugees-suffering-lack-documentation-bangladesh ].



*Malaysia: Invest in Solutions for Refugees*
In March, Refugees International traveled to Malaysia, and found that the government has taken significant steps forward in improving refugee rights. In the past year, there have been no reported attempts to deport Burmese refugees to the border with Thailand and a decrease in immigration raids and arrests of registered refugees. RI urges the government of Malaysia to build on this progress by setting up a path to residency and work permits for refugees. Now is the moment for the international community to help UNHCR leverage this opportunity and continue to improve refugee rights.

 * Read the full field report [ http://refugeesinternational.org/policy/field-report/malaysia-invest-solutions-refugees ].
 * Read the story of Gultaz [ http://refugeesinternational.org/blog/international-women%E2%80%99s-day-stateless-woman%E2%80%99s-story ], a Rohingya refugee in Malaysia.



*Libya: Back from the Field*
Libya remains in a state of upheaval. The latest numbers show that more than 615,000 people have fled the country since violence broke out in February. As Refugees International described in an April field report, people inside the country -- particularly in the east -- are still struggling to access humanitarian aid due to the high levels of insecurity. The UN must continue to expand its operations inside Libya in order to better identify people's needs and ensure access to assistance. In addition, the U.S. and other countries should commit to resettling those refugees currently on Libya's borders and continue to fund the evacuation of third-country nationals.

 * Read the full field report [ http://refugeesinternational.org/policy/field-report/libya-mission-report ].



*Colombia Fails to Assist Victims of Massive Floods*
Months after torrential rain and massive flooding pounded Colombia, thousands of people are still not receiving basic assistance including food, water, sanitation, emergency shelter, and health care. Alice Thomas, Program Manager of RI's Bacon Center on Climate Displacement recently returned from Colombia where she assessed the needs of those affected by the floods. Keep an eye out next month for her in-depth report on the steps needed to improve the response to this and other climate-related disasters.

 * Read our call to Colombian President Juan Manuel Santos [ http://refugeesinternational.org/press-room/press-release/el-gobierno-de-colombia-est%C3%A1-fallando-en-proveer-ayuda-esencial-las-v%C3%ADctima#English ] to respond to the needs of hundreds of thousands of Colombians.

 * Sign up to receive updates [ http://refugeesinternational.org/signup_email ] on this issue (check "Climate Displacement" under "Core Issues").



*32nd Anniversary Dinner*


Only a few tickets remain for our 32nd Anniversary Dinner [ http://refugeesinternational.org/events/32nd-anniversary-dinner ].

Join us in honoring
Governor *Bill Richardson*
Senator *Patrick Leahy*
Ambassador *Richard Holbrooke*
and *Amina Ali*

Also featuring a special performance by Sudanese musical sensation
*Emmanuel Jal*

 Master of Ceremonies
*Sam Waterston*


Thursday, May 5, 2011

Andrew W. Mellon Auditorium
Washington, DC

Purchase your ticket today! [ https://app.etapestry.com/hosted/RefugeesInternational/Registration_2.html ]

*After Party*

Join RI's Young Humanitarian Circle at the
*32nd Anniversary Dinner After Party*.
RSVP at refugeesinternational.org/anniversary-dinner/after-party

---

donate [ http://www.refugeesinternational.org/donate ]
 [ http://twitter.com/RefugeesIntl ]
 [ http://www.facebook.com/RefugeesInternational ]
 [ http://www.youtube.com/user/RefugeesIntl ]

Wednesday, February 23, 2011

Libya and Gaddafi

Yesterday's allies are today's enemies. Some maintain that Gaddafi will not resign like Mubarak, and that he will fight to the death. The irony is that Gaddafi began his career in Benghazi, Libya's second largest city, where the uprising began. It was the first city to catch the revolutionary bug from Egypt. Now it has spread to the capital, Tripoli.

The Middle East and North Africa have become utterly unpredictable. Literally anything could happen at this point. It remains unclear who will fill the void left by the ousted leaders. Instability will breed further instability. The situation is reminiscent of the Balkans on the eve of World War I. We are on very dangerous ground, indeed.


Muammar Abu Minyar Abdel Alam ben Hamid al-Gaddafi (his family name originates from the Bedouin tribe of al-Gaddafi) wrote himself into the pages of history in September 1969, when he helped overthrow King Idris in a military coup. At the time, the Middle East was a battleground in the proxy war fought between the Soviet Union and the United States. This was the time of Richard Nixon, Leonid Brezhnev, and Egyptian President Abdel Nasser (who was an inspiration to the 27 year-old Captain Gaddafi).

After taking power, Gaddafi introduced sweeping changes in Libya. It was a fresh breeze of colonial liberation, social justice, battles against corruption and red tape, and freedom for the people, not to mention Islamic morals and Sharia law. It was the Arab Muslim version of people's power.

All the "adult" nations - America, the USSR, Egypt, the UK, France, Italy - watched in amazement as the young and charismatic captain eliminated all foreign military bases and nationalized the oil industry as well as all foreign companies and banks. The Soviet Union would have been pleased by this turn of events, except that Gaddafi also started clearing the political playing field of all communists, left-wing and rampant right-wing forces and Muslim radicals.

The political harmony he created was both anti-imperialist and anti-Soviet. However, this did not prevent Moscow and Tripoli from working together as a counterweight to Anwar Sadat's pro-U.S. Egypt.

Gaddafi tried to strike up alliances with his Arab neighbors in a very strange way - by claiming the role of pan-Arab leader for himself. Gaddafi wanted to be first among equals. His megalomania became more pronounced with time. Gaddafi failed to unite Libya with Egypt, Tunisia and Algeria. His union with Morocco fell apart, and his alliance with Iran proved short-lived.

He did away with the presidency, the government, the office of prime minister, parliament and local bodies of state authority and replaced them all with Jamahiriya - a state of the masses ruled by various levels of people's committees.

He ultimately turned his back on nationalization, and again opened Libya's doors to foreign companies. Once a total outcast he turned himself into an acceptable if not a respectable politician in Europe. It's hard not to accept a politician whose country ranks fifth in oil reserves in Africa. Italy was particularly accepting, as it receives almost 60% of its oil and gas from Libya.

It is hard to believe that Captain Gaddafi, the leader of the 1969 coup, is the same person as Col. Gaddafi today. There was a time when he was called "brother-leader" and hailed as the liberator of Libya. Some even believed he was the savior of the entire Arab world.

WikiLeaks cables:


US embassy cables shed light on Gaddafi family – including son Saif al-Islam, who vowed in TV address to eradicate enemies.

According to US diplomatic cables released by WikiLeaks the leader of the Libyan revolution presides over a "famously fractious" family that is powerful, wealthy, dysfunctional and marked by internecine struggles. The documents shed light on how his eight children – among whom rivalries have sharpened in recent years – his wife and Gaddafi himself lead their lives.
  

Safiya (nee Farkash)

Gaddafi's second wife travels by chartered jet in Libya, with a motorcade of Mercedes vehicles waiting to pick her up at the airport to take her to her destination, but her movements are limited and discreet. Hosted a banquet in the Bab al-Azizia compound on the occasion of the anniversary of the revolution that was festive but not extravagant. Hails from Benghazi, the centre of the rebellion in eastern Libya.

Saif al-Islam

Second-eldest son. Presumed heir-apparent in recent years who warned of civil war when he addressed the nation on Sunday night. A trained engineer who promotes political and economic reform and backed NGOs under the aegis of the International Charitable Gaddafi Foundation. Has PhD from the London School of Economics.

"Saif al-Islam's high-profile role as the public face of the regime to the west has been a mixed blessing for him. Has bolstered his image but many Libyans view him as self-aggrandising and too eager to please foreigners," the US embassy said.

Escorted the convicted Lockerbie bomber Abdelbaset al-Megrahi home to die in August 2009 "and persisted in his hard-partying, womanising ways, a source of concern in a socially conservative country like Libya". Cables claim at odds with siblings Muatassim, Aisha, Hannibal, and Sa'adi.

Sa'adi

Third-eldest son. "Notoriously ill-behaved Sa'adi has a troubled past, including scuffles with police in Europe (especially Italy), abuse of drugs and alcohol, excessive partying, travel abroad in contravention of his father's wishes Former professional footballer (a single season with Perugia in Italy's Serie A league, he owns a significant share of al-Ahli, one of the two biggest soccer teams in Libya, and has run Libya's football federation). An engineer by training, Sa'adi was briefly an officer in a special forces unit.

Used troops under his control to affect the outcome of business deals. Owns a film production company. Reported to have been involved in crushing the protests in Benghazi.

Muatassim

Fourth-eldest son. Father's national security adviser and until recently a rising star. In 2008 he asked for $1.2bn (£739m) to establish a military or security unit akin to that of his younger brother, Khamis. Lost control of many of his personal business interests between 2001 and 2005 when his brothers took advantage of his absence to put in place their own partnerships. Described as "not very bright" by Serbian ambassador. Gets on badly with Saif al-Islam.

Hannibal

Chequered history of unseemly behavior and public scuffles with authorities in Europe and elsewhere. Arrest in Geneva over alleged beating his servants led to bilateral spat with Switzerland, in which Swiss were forced to back down under threat of withdrawal of Libyan investments.

In December 2009, police were called to Claridge's hotel in London after staff heard a scream from Hannibal's room. Aline Skaf, now his wife, was found to have suffered facial injuries but charges were not brought after she maintained she had sustained the injuries in a fall. Fifth eldest son.

Khamis

Gaddafi's sixth son and the "well-respected" commander of a special forces unit – 32nd battalion or Khamis brigade that effectively serves as a regime protection unit and was reportedly involved in suppressing unrest in Benghazi. Trained in Russia.

Aisha

Daughter who mediates in family disputes ands runs NGO. Reported to have financial interests in a private clinic in Tripoli, one of two trustworthy facilities that supplement the unreliable healthcare available through public facilities. Lionel Richie was flown to Libya several years ago to sing at her birthday celebration. A younger adopted daughter, Hanna, was killed in the US bombing of Tripoli in 1986.

Muhammad

The eldest son, but by Gaddafi's first wife. Heads the Libyan Olympic committee that now owns 40% of the Libyan Beverage Company, currently the Libyan joint venture Coca-Cola franchisee. Also runs general post and telecommunications committee.

Saif al-Arab

Least publicly known of the eight children. Reportedly lives in Munich, where it is claimed he pursues ill-defined business interests and spends much time partying.

Like all the Gaddafi children and favourites is supposed to have income streams from the national oil company and oil services subsidiaries. A seventh son, Milad Abuztaia, is an adopted nephew.


Courtesy : Excerpts form article published in the RIA Novosti and WikiLeaks

Washington a hot bed for sex trafficking . Human trafficking to rise due to financial crisis


http://rt.com/usa/news/usa-washington-sex-trafficking/

America is quick to condemn other nations for the sexual exploitation of girls, when in fact it occurs daily in the United States.

Contrary to public belief in America sexual exploitation of children does not only take place in developing countries.

The trafficking of minor is a big moneymaker, the third highest profit driver among organized crime in the United States. Often, American teens and children are recruited in public areas, such as malls, entertainment centers and schools.

Tina Frundt, the founder of Courtney’s House, a non-profit organization that helps girls who have been victims of human or sex trafficking, explained many in the US believe there are lots of laws put in place to protect trafficked children, when in reality there are not.

Powerful and rich men in the United States, specifically in Washington DC, seek out sex with girls that are often trafficked blocks from the White house.

Frundt, a survivor of sex trafficking, works in Washington to find and help those who are in danger.

How do you identify a victim? Well at 3:00 and 4:00 in the morning downtown there’s nothing open, but there are many many men watching the girls. That’s what you look for to find the victims, the men watching them,” she explained.

Even with all all the police forces in Washington, the city is still a hot bed for trafficking, because currently the laws target victims, not traffickers.

“There is no risk for the traffickers or the buyers if we’re going after the victims,” she said. “Prostitution is illegal in the United States, so unfortunately we have to make laws to make the two different.

Frundt argued changes need to be made to help those who are forced into prostitution, to target traffickers and buyers as opposed to prostitutes.

http://rt.com/news/human-trafficking-to-rise-due-to-financial-crisis/

Human trafficking to rise due to financial crisis

A network of 13 people, reportedly headed by a senior intelligence official, are facing charges of human trafficking. It follows a case where more than 130 women were sold as slaves across Europe.

This most recent slave-trade case has shocked the public as the man who allegedly pulled the strings of the crime network is a senior official in Russian Intelligence. Leaks from the prosecution claim he acquired documents for the women under the pretence they were needed for secret intelligence missions abroad.

“The investigation has shown that in the period from 1999 to 2007, this criminal organization sold over 130 women, most of whom were citizens of Moldova, Ukraine, Uzbekistan, Belarus and Russia. They were sold to Israel, Italy, Spain, Germany, Greece, the Netherlands and the United Arab Emirates,” investigator Alexander Kudlay said.

In the nineties tempting offers of work abroad flooded the internet and are still found in abundance. Dubious employers promise high wages for working as waitresses or nurses, but upon arrival the women are stripped of their passports and forced into slavery.

Olga was among those who swallowed the bait. Her fate was decided over a cup of coffee.

“We arrived in Jerusalem. The guy who escorted me met with another man. We were sitting in a cafe and as I listened to their conversation, I suddenly realised that I was being sold. When they struck the deal I was taken to a brothel where I stayed for a year,” she remembered.

She spent one year in captivity in Tel-Aviv.

Today she is working in a rehabilitation centre for women who were victims of trafficking.
“People are easily deceived by new illusions to find a job elsewhere,” Alberto Adriani from International Organization for Migration said.

Russia has one of the worst records for human trafficking, both importing and exporting slaves.
It is a profitable business with an estimated trade worth $42 billion a year. Experts say statistics are likely to rise with the current economic downturn.

“It was increasing before, it will increase always. What I think is necessary is to increase the exchange of information on the international level to find a common strategy,” Alberto Adriani said.

Thirteen men have been detained on various charges, ten of them in custody, and may face trial in the spring. With human rights organizations suggesting that tens of thousands of women are enslaved in the sex-trade, experts say that this one case alone is merely the tip of the iceberg.

Suleiman: America’s new man in Egypt


http://rt.com/usa/news/usa-suleiman-cia-egypt/

Egypt's Vice-President Omar Suleiman is the nation’s former spy chief, a friend of the US, a reported torturer, and has long been touted as the next presidential successor.

As the Egyptian revolution unfolds, Egyptian President Hosni Mubarak remains in power, but his is not the only US backed political leader in the nation.

Suleiman, or as the protestors have referred to him, “Sheik al-Torture" has long been an ally of the United States. US President Barack Obama has been careful not to call for “free elections” in Egypt, and instead insists on an orderly transition, one which could see another US backed leader ascend to power.

Mubarak may still be in charge officially, Suleiman is currently operating as the nation’s de-facto president.
Journalist Pepe Escobar from the Asia times explained the US fears Arab democracy. The US needs dictators and autocracies which are controlled to secure oil supplies and the security of Israel, he argued. It is easier to control one or a small body then a large democratic body.

Escobar said Suleiman fits the same mold Mubark and numerous other Arab dictators in the past also fit, making his assent to power an easy transition for the United States. Suleiman is a CIA point-man.

Suleiman is not real change, he explained.

Real change is the enormous list of demands that’s being circulated among the protestors, among youth groups,” Escobar said. “This implies, first off all, Mubarak stepping down. A committee that is going to study the Constitution and alter the Constitution then submits this altering to a referendum, judges to supervise the process and the end of the state of emergency. Suleiman, if I am not mistake, said two days ago, no.”

He explained if you listen to the Egyptians that is the roadmap for change in the country. They want change, not more of the same.

The face of Egypt is not the Muslim Brotherhood, Escobar explained. He argued the majority of the Egyptians want a true democratic society. In addition, the Muslim Brotherhood has denounced violence and a number of previous extremist views. They want to have a say in the government, not rule it as an Islamic state.

However, the US continues to believe Muslim Brotherhood is a threat, no matter what the people of Egypt want or actually believe.

Egypt it pivotal to US policy in the Middle East, and they fear any change to their control over oil and the security of Israel, argued Escobar.

Lisa Hajjar, an associate professor of sociology at the University of California in Santa Barbara argued Suleiman is the CIA’s man in Egypt, and has been for years.

Suleiman ran Egypt’s counterpart to the CIA up until just a few days ago when we was appointed as Vice President by Mubarak. He has actively worked with the CIA is programs targeting al-Qaeda and other groups, she said.

Following 9/11 Suleiman became even more relevant, acting as a major player in carrying out America’s “Dirty work.”

Suleiman had his hands literally dirty in the torture of several people,” Hajjar commented.
There is a great deal of torture that goes on routinely in Egypt, she explained. Suleiman has focused on targeting international terrorist criminals, at the behest of the United States.

Many of the protestors see him as another Mubarak and it is unclear whether the Egyptian military fully supports him.

Suleiman probably will not survive beyond September when there is an election. He is unlikely to be a democratically elected president,” she added.

US concern for Mideast public not genuine – Egypt specialist

http://rt.com/news/middle-east-unrests-usa-interests/

Published: 15 February, 2011, 20:31
Edited: 16 February, 2011, 11:40

  
The US is defending its own interests in the region and that is impossible without pretending to support the democratic process prevailing in the region, says Middle East expert Barah Mikhail from Islamabad.
­In the wake of the Egyptian revolution, activists in the Middle East are turning up the heat on their governments.

Riots have broken out across the region. Two demonstrators were killed in Bahrain on Monday. An activist was also shot dead by police in the Iranian capital. The protest in Tehran took place just a day after the US State Department began inspiring Iran's opposition with Twitter messages. It's the first such riot in the country in over a year.

On Tuesday, Iranian MPs called for opposition leaders to be tried and executed. US Secretary of State Hillary Clinton says Washington "clearly and directly" supports the protesters.

Hillary Clinton called the Iranian regime “hypocritical.” She said that President Mahmoud Ahmadinejad rallied behind the protesters on the streets of Egypt, but now that he is witnessing protests in his own country, he is using harsh violence against the demonstrators. What to do with Iran is a big concern for the US.

At the same time, the US is very nervous after watching events unfold in Egypt, where it supported President Mubarak for 30 years. The US now has to redefine its role there and also send out a message to other allies in the region that it will not leave them out in the cold – as it did, many say, to Mubarak.

Mikhail argues that over the last decade US policy in the region has been based on support for authoritative governments, and that now it is trying to play both sides of the fence.

“For example, at the beginning of riots in Egypt they did not really support the public,” he said. “But when they noticed that they could not do anything against the revolution which was taking place, then they decided to conform with public opinion and tell them they were in favor of the democratic process.”

Egypt is gripped by labor strikes, where interim power is now in the hands of the military which is reworking the constitution.

Professor Robert Springborg of the Naval Postgraduate School believes that with ideological splits in the military, the army leadership has more to worry about than US interference.

“They will not want the military to be subject to civilian political control,” he said, adding that the primary concern of Egypt’s defense minister is business, not the military, but there are “officers who are professional and who think the business of the military should be the military, not the business itself.”


Author and researcher Adrian Salbuchi from Argentina says that US policy in the Middle East might work against national interests.

“The US is trying to achieve a way to promote change in a way which will facilitate things for them,” Salbuchi said. “The global power structure which is entrenched inside the US might not be working in the national interest of the people of the United States. It has other, very specific interests which might even go against the national interest of the United States of America.”

Courtesy : RT

Friday, February 11, 2011

Hindu Janajagruti Samiti on Valentine Day

http://www.hindujagruti.org/activities/campaigns/religious/valentine-day/


Contents -


What is the harm in celebrating 'Valentine day' ?

  1. There is no scientific or cultural basis to celebrating this day.
  2. Valentine the 'saint' himself was involved in the anti-national acts during his time, then how one can get any benefit by celebrating this day in his name ?
  3. On this day young girls and boys come together at pubs, sea shores, hotels, colleges etc and indulge in indecent acts. A common person finds it difficult to even go around such places at this time. Some organisations organize such programs where the young boys and girls can stay together.
  4. The young students of schools and colleges are falling prey to this alien cultural influence and express their 'love' for each other by way of exchanging greeting cards. In reality what they experience at this tender and immature age is not love but a mere superficial attraction to the opposite sex.
  5. Psychiatrists can site several cases of people who have 'proposed' on 'Valentine's day' due to various shades of mental turmoil. Women who have been duped or lured by them and have married them have had to suffer great mental and physical torture.
  6. This practice is damaging as it results in a long lasting negative effect on any youth's career and also on society.
  7. The seeds of immorality which are planted on this day, later cause the destabilization of society through a general fall in morality.
  8. We can recognize a direct attack from an enemy outside but this cultural invasion is insidious and very difficult to recognize and so it is difficult to defend ourselves from its evil results.
  9. Cultural derailment always results in society heading towards destruction. This is what we are experiencing today in our Bharat (India).
  10. Many western countries do not celebrate this day. The Calendar of Roman Catholic Saints' was prepared in 1969, 'Valentines Day' was omitted from the general Roman calendar. If this is so, then why should we honour this day in our Hindustan?
  11. Western culture provides for placing parents in 'old age homes' and then superficially celebrates Mother's Day' and Father's Day' for just one day ! Can real love be limited to just a day ? Indian culture has a number of festivals that express love towards each other and these deep rooted bonds of love are an intrinsic part of our lifestyle.

O, Hindu Youth, Why fall for the trap of 'Valentine Day'?

Get ready to fight the calamities befalling the Nation and Hindu Dharma instead !

14th February is known as 'Valentines Day' in some countries. On this day, both male and female youngsters exchange flowers and gifts as a token of love. Does real love require this superficial display and can it be confined to just one day? It is the western custom to put parents in old age homes and then celebrate flashy Mother's Day and Father's Day love which is put on display for just one day ! Now this madness is taking root in our beloved Hindustan which has the richest and most sublime culture in the world.

Is love only limited to physical attraction ? Love is present in sacred relationships such as the Guru and the disciple, brothers and sisters, mothers and fathers and even towards ones motherland. If young revolutionaries, such as Bhagat Singh, Rajguru, Sukhdev, Madan Lal Dhingra and Chapekar who sacrificed their lives in their youth, had spent their days celebrating days such as Valentine's days then we would never be able to enjoy freedom today. What pain their souls must be suffering in seeing their dreams being shattered in this way !

Shivaji Maharaj took the vow of establishing Hindavi Swarajya at a tender age of sixteen and went on to unite the Mawala youth of his age and thus sowed the seeds of Swarajya (self governance) and pride in Dharma. Why don't we look at these great people as our ideal? Do you really think that the so called 'Saint Valentine' who directs the youth towards the wrong path of allurement of woman is superior to the above mentioned Great men?

It is said that love can conquer the world; then why couldn't we win Kashmir with love? If the love of 'Valentine' is so powerful then why can't his love change the hearts of terrorists creating havoc in Kashmir and killing innumerable innocent brethren of ours in rest of Hindustan? In today's times when 10 young terrorists from Pakistan attack our country with an intention to destroy it, why should our young generation in contrast get trapped in the celebration of 'Valentine Day' ? Therefore this is a call to harness the power of our youth to turn them towards the defence of the Nation and Dharma...

The History of Christian Saint (?) Valentine

In the olden days Rome had the culture of Idol-worship. In those days, the period between February 13 to 15, used to be celebrated as the 'Reproduction Festival' and was called 'Lupercalia'. However to destroy their culture of idol worship and their Christianisation, Pope Galasis (First) connected Valentine with 14th February and started the practice of celebrating 'Valentine Day'. There was no connection between 'Valentine Day' and 'Love' until the fourteenth century.

Similarly according to some, in third century the King Claudius (Second) of Rome took out the order that the young men should not marry and should join the army to face the repeated attacks occurring on the nation. However a priest named Valentine did not pay heed to this order and performed marriages of many young men and women secretly. He was sentenced to death and was sent to prison for his traitorous act. This so called saint then seduced the young daughter of a prison official while being in prison. Thus this Valentine who was supposed to have sacrificed all attachment while being initiated as a missionary fell prey to allurement. What benefit are Hindus going to derive by remembering such 'Saints'?

The detrimental effects of 'Valentine Day'!

Today we are blindly following the western culture under the name of 'Valentines Day'. The young students of schools and colleges are falling prey to such culture and express their love to each other by way of exchanging greeting cards. But actually speaking it is not love but a mere attraction to the opposite sex at a tender and immature age. During my practice of over 15 years I have seen several such mentally ill patients who have stuck to their mental illness by 'proposing' on 'Valentine Day'. Following are some live examples -
1. One day one couple came to the Panchakarma Department of 'Yerala Ayurved College' for undergoing Pancha Karma treatment and health consultation. The woman was a Maharashtrian and the man was from Punjab. They had done inter-caste marriage. Both of them were studying at a private college. They were classmates. They had proposed to each other by way of exchanging love in the form of a greeting card on a Valentines Day function in the college. After the marriage however the man was found to be a sadist. The different nature and environment affected her emotional, mental and spiritual development and her condition deteriorated into a grave mental illness.
2. In a second case, a couple visited the 'Keraliya Ayurved Centre' at Panvel for psychological treatment. The husband was a Malyali and his wife a Maharashtrian. They got acquainted with each other while working in the office. They got married on Valentine's Day by going to a church. However after marriage she came to realize the huge difference between their culture, language, customs and in their intellectual level of functioning. This made a huge impact on the woman and lead to her health deteriorating. - Dr. Rajiv Bhosekar, Psychiatrist, Hyderabad, AP, Bharat.

'Valentine Day' confers no spiritual benefit !

Most of the 'days' which have arisen out of a blind following of western culture are mostly based on a 'fun and frolic' philosophy. Their following devalues the morality and politeness and the attitude of the person becomes predominant in raja-tama attributes (raja-passion, tama-inertia and ignorance). As against this, when we celebrate rituals, festivals, religious festivals and observed religious vows, we are benefitted by the frequencies of Deities transmitted from the Universe. The observance of rituals, festivals, religious festivals and observed religious vows makes our attitude predominant in sattva (purity and knowledge) and life becomes balanced, happy and contented.

Taking advantage of the suicidal attitude of Hindus to celebrate 'Valentine Day' ( the so called day of �love'), modern media and some companies selling greeting-cards vigorously propagate 'Valentine's Day' with a selfish motive. In this way, the intellectual and cultural conversion of Hindus is taking place.

Remove this infestation of Hindu Culture in the form of 'Valentines Day' and protect the coming generations from a cultural viewpoint!


'Valentine Day' (14th February) is not celebrated in many of the western countries!



To celebrate various 'days' of the westerners is a sign of greatness for most of us. However it is a fact that in many western countries 'Valentine's Day' is not celebrated on 14th February. Instead various other days are celebrated. (For example 1. Slovenia-12th March- Saint Gregory Day, 2. Wales State-25th January- Saint Donwen Day, 3. Brazil-12th June - Enamoured Day). What is more, when the 'Calendar of Roman Catholic Saints' was prepared in 1969, 'Valentine Day' was omitted from the general Roman calendar. If this is so why then should we value this day in our Hindustan?


A call to Citizens for Protection of Culture!

  • Meet Principals, Professors, the Board of Directors and Representatives of Students' organizations by going to Schools, Colleges and Private tuitions and request them to educate the youth against the observation of 'Valentine's Day' !
  • Distribute pamphlets such as this to prevent the celebration of 'Valentine's Day' !
  • Display the banners or boards in your area with such contents !
  • Lodge protests with those companies manufacturing greeting cards meant for canvassing 'Valentine Day'!
  • Lodge protests with such colleges who silently give consent for celebrating 'Valentine's Day' by way of actual visits, telephone calls or other constitutional ways !
Article - Oppose 'Valentine's Day' that promotes immorality!

Remember the National Heroes for the protection of Nation and Dharma!

The time has come when all the people including the young generation have to be explained about the depth in the divine meaning of Love in addition to educating them about 'Valentine Day'. It is the need of the hour that those national heroes who have sacrificed so much for the love of this Hindu land ought to be remembered not only for the benefit of the young generation but also for the whole population to get ready for the protection of our languages, our Nation and our Dharma. Therefore do celebrate the following remembrance day programmes in February 2009 !

1. Revolutionary Vasudev Balwant Phadke Remembrance Day ( 17 th February)
2. Swatantryaveer V.D.Sawarkar ( 26 th February)
3. Chhatrapati Shivaji Maharaj Jayanti ( 13 th March, according to Hindu Lunar calendar)

On these occasions we can arrange image worship and lectures in schools, colleges, Chowks and educate the people about the current state of our languages, our nation and our Dharma.
Prevent the intellectual and cultural proselytization ( conversion) of Hindus on 'Valentine Day'!

Latest News


Date News
Feb 8, 2011 Celebrate Valentine's Day not with your lover, but with your parents
Feb 10, 2010 HJS appeals to boycott ‘Valentine Day’ !
Sep 26, 2009 Wrong practices taking place in pubs and colleges, on Valentine’s Day to be curbed
Feb 17, 2009 Success for HJS's anti-Valentine Day campaign!
Feb 16, 2009 Activist of HJS arrested unreasonably!
Feb 14, 2009 Anti-saffron media falsely implicates Bajrang Dal in V-Day attack
Feb 14, 2009 Won't allow obscene scenes in public, says Sri Ram Sena
Feb 14, 2009 Mulund school to celebrate V-Day as 'Matru-Pitru Din'
Feb 13, 2009 Shivsena will always oppose Valentine's Day: Manohar Joshi
Feb 12, 2009 Fatwa against Valentine's Day - Valentine's Day Massacre

Amnesty International: UK-trained security forces must stop extrajudicial executions in Bangladesh

http://www.amnesty.org/en/for-media/press-releases/uk-trained-security-forces-must-stop-extrajudicial-executions-bangladesh-20

AMNESTY INTERNATIONAL
PRESS RELEASE

27 January 2011

UK-trained security forces must stop extrajudicial executions in Bangladesh

Amnesty International is calling on the UK government to raise concerns about reports of torture, extrajudicial executions, and excessive use of force by the Rapid Action Battalion (RAB) with the Prime Minister of Bangladesh, Sheikh Hasina.

Sheikh Hasina is in the United Kingdom this week amid a flurry of accusations about extrajudicial executions carried out by Bangladeshi security forces.

Amnesty International and other human rights organisations have documented repeated instances of human rights violations by the RAB in the past five years. More than 600 people are thought to have been killed by RAB personnel since 2004 when the battalion was created.

In most cases, victims have died in the custody of the RAB, but police authorities routinely reported that the victims were killed during "crossfire", police "shoot-outs" or "gun-battles".

Abbas Faiz, Amnesty International’s Bangladesh researcher, said:

“Suggestions that these deaths in custody are just unrelated random incidents, as opposed to targeted executions, are simply not credible. The chances of this same fate befalling so many apprehended individuals defies belief and contradicts eye-witness testimony. These deaths amount to extrajudicial executions.”

“The deaths must stop now, and the responsible personnel must be brought to justice without delay,” Abbas Faiz said.

Comments and announcements from Bangladeshi government authorities over recent days have demonstrated a hostile defiance in response to national and international calls to address the claims.

The Bangladeshi Home Minister, Shara Khatun, yesterday denied that extra-judicial executions have ever taken place in Bangladesh during the time of the present government and today went on to accuse human rights organisations of "siding with the criminals"

Recently Wikileaks sources alleged that UK police have been training the RAB in Bangaldesh.

Abbas Faiz, added: “Any country that knowingly trains a force, which systematically violates human rights, might itself bear some responsibility for those violations. “

Public Document
****************************************
For more information please call Amnesty International's press office in London, UK, on +44 20 7413 5566 or email: press@amnesty.org
International Secretariat, Amnesty International, 1 Easton St., London WC1X 0DW, UK